রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, রসুন আমাদের দৈনন্দিন খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রসুন ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। রসুন খাওয়ার উপকারিতা আছে অনেক। এর পাশাপাশি এর অপকারিতা আছে।
তরকারি সুস্বাদু করার জন্য অন্যান্য পেঁয়াজ, মরিচের সাথে রসুন ব্যবহার করা হয়।
রসুনে বিভিন্ন ধরনের উপাদান আছে যেগুলি আমাদের শরীরের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে থাকে।
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া এর
আরো উপকারিতা রয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- রসুনের খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা রসুনের অপকারিতা
- রসুনের থাকা পুষ্টিগুণ সমূহ
- কাঁচা রসুন খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন সকালে একবার রসুন খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
- সকালে একবার রসুন খেলে ৮ রোগ কাছে আসবে না
- যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের উপকারিতা
- লেখকের শেষ কথাঃ রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। রসুনে আছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি এবং বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। রসুনের মধ্যে রয়েছে এক ধরনের এলিসিন নামক এক উপাদান, যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
রসুনের মধ্যে রয়েছে থিয়ামিন, রিবোফ্লাভিন,নায়াসিন নামক বিভিন্ন উপাদান। যা
আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। রসুন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে, রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। হৃদপিন্ডের শক্তিবর্ধক
হিসেবেও কাজ করে। রসুনের মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো উচ্চ রক্তচাপ
কমাতে সাহায্য করে।
এর পাশাপাশি রসুনের অনেক অপকারিতা আছে। অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে শরীরের নানা
সমস্যা দেখা দেয়। যেমন অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে রসুনে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক
উপাদান অ্যালিসিন লিভারে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে। রসুনের সালফার যা আমাদের
পেটে গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে। তাই রসুনের উপকারের পাশাপাশি অপকারও আছে।
রসুনের খাওয়ার উপকারিতা
রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রসুনে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যেমন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল,
অ্যান্টিফাঙ্গাল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়াতে অনেক সহায়তা করে।
হৃদপিন্ডের শক্তিবর্ধকঃ হৃদপিন্ডের শক্তিবর্ধক হিসেবে আপনি রসুন
খেতে পারেন। দৈনন্দিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন পানি দিয়ে গিলে খান এতে
হৃৎপিণ্ড মজবুত হবে। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে যার কারণে হৃদপিন্ডের ব্লগগুলো আর
বাড়বে না, বুকের ব্যথা দূর হয়ে যাবে এবং উচু জায়গায় ওঠার সময় কষ্ট হবে
না।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করেঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুন খুব ভালো
কাজ করে। শরীরের এলডিএল এর পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্তচাপ দেখা দেয়। প্রতিদিন
সকালবেলা দুই কোয়া রসুন খেলে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে।
রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে রসুন অনেক ভালো একটি উপাদান। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খান তাহলে আপনার রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। রক্ত বাধাগ্রস্ত হয়ে যেসব রোগের সৃষ্টি হয় সেসব রোগগুলো আর হবে না।
আরো পড়ুনঃ
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
পুরুষের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়কঃ সাধারণত পুরুষদের যৌন ক্ষমতা নানা
কারণে কমে দিতে পারে। এ সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে আপনি প্রতিদিন সকালে খালি
পেটে রসুন খেতে পারেন এতে আপনার যৌন ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। পুরুষদের যৌন
ক্ষমতার মূল যে উৎস সেটা হচ্ছে সক্রিয় রক্ত চলাচল। আর যেহেতু রক্ত চলাচল
সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে রসুন, সেহেতু পুরুষদের জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য
করবে এ রসুন।
কোষের ক্ষতি রোধ করেঃ রসুন খাওয়ার ফলে শরীরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
'সেল ড্যামেজ 'এবং 'এজিং' দূর হয়ে যায়। এছাড়াও ব্রেনের কোষের সিল ড্যামেজ কমে
যায় যার ফলে আলঝেইমারস ও ডিমেনশিয়ার এর মত রোগ কমে যায়।
ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধঃ আমাদের ফুসফুস বিভিন্ন কারণে সংক্রমণ হতে
পারে। যেমন এলার্জি সমস্যা, ঠান্ডা লাগার প্রবণতা গুলো থেকে ফুসফুসের সংক্রমণ
ঘটতে পারে। আর এ সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে রসুন পিষে তার রস খেতে
হবে এতে করে ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
হাড়ের শক্তি বাড়ায়ঃ একটা সময় আসে যখন নানান কারণে মানুষের হাড়ের
শক্তি কমে যায়। বিশেষ করে যখন বয়স বেশি হয় তখন নারীদের হাড়ের শক্তি কমে যায়।
প্রতিদিন ২ গ্রাম করে রসুন খেলে নারীদের শরীরের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ভারসাম্য
অবস্থায় থাকবে, এতে করে তাদের হাড়ের শক্তি কমে যায় এই রোগটি কমানো যাবে।
ত্বক ভালো রাখে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করেঃ প্রতিদিন সকালে যদি আপনি
দুই কোয়া রসুন খালি পেটে খেয়ে নেন তবে আপনার ত্বক ভালো থাকবে। এবং চেহারায় কোন
ধরনের দাগ থাকলে তা কমে যাবে। ব্রণ খুব সহজে কমে যাবে এবং সেই ব্রণের দাগ
দূর হয়ে যাবে।
কাঁচা রসুনের অপকারিতা
যেমন শরীরের নানান সমস্যার জন্য রসুন খুবই উপকারী উপাদান, তেমনি অনিয়মিত
অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। রসুন একটি
নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে শরীরের সুস্থতা দানের পরিবর্তে
অসুস্থতা বয়ে আনবে। তাই বলা যায় যে রসুনের উপকারের পাশাপাশি অপকারও আছে।
রসুনের কিছু অপকারিতা
- অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সঠিক মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে রসুনে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান যেমন অ্যালিসিন লিভারে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। এতে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
- রসুন রক্তের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। যারা ওয়ারফারিন, অ্যাসপিরিন ইত্যাদি ধরনের ওষুধ সেবন করেন তাদের অতিরিক্ত রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এতে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে যায়।
- রসুন সালফার থাকে। আর এই সালফার পেটে গ্যাসের সৃষ্টি করে। তাই অতিরিক্ত রসুন গ্রহনের ফলে পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া খালি পেটে রসুন গ্রহনের ফলে ডায়রিয়াও হতে পারে।
- গর্ভবতী নারীদের রসুন খেলে প্রসব বেদনা বেড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এছাড়াও যেসব মা শিশুদেরকে বুকের দুধ খাওয়াই তাদের রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে দুধের স্বাদ পাল্টে যায়।
- অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। দীর্ঘদিন রসুন খেলে ঘাম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
- অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে মুখের দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। আর এই দুর্গন্ধের মূল কারণ হচ্ছে রসুনে থাকা সালফার উপাদান।
- এছাড়া অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে আমাদের চোখের আইরিন ও কর্নিয়ার মাঝে রক্তক্ষরণ ঘটতে পারে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত রসুন খাওয়া উচিত নয়।
রসুনের থাকা পুষ্টিগুণ সমূহ
রসুনে থাকা পুষ্টিসমূহ, রসুনের মধ্যে অনেক পুষ্টি এবং বায়োঅ্যাকটিভ যোগ আছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও আরো অনেক উপাদান রসূলের মধ্যে রয়েছে। যেগুলি হচ্ছে থিয়ামিন, রিবোফ্লাবিন, নায়াসিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, ভিটামিন বি ৬, সেলেনিয়াম ইত্যাদি। এই উপাদানগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
এছাড়াও রসুনের মধ্যে রয়েছে এলিসিন নামের একটি উপাদান যা আমাদের স্বাস্থ্যের
জন্য খুবই উপকারী। এই এলিসিন নামক উপাদানটি ক্যান্সারসহ শরীরের বিভিন্ন সমস্যা
দূর করতে সক্ষম। এলিসিন নামের এই উপাদানটি রসুনের মধ্যে থাকার কারণে রসুনকে সুপার
ফুটির অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তাই রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক।
কাঁচা রসুন খাওয়ার নিয়ম
অ্যালিসিন, কাঁচা রসুনের পাওয়া একটি যৌগ। এটি একটি কোলেস্টেরল হ্রাঁসকারী উপাদান এবং শরীরের রক্ত পাতলা করার বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। তাই আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সকালে এক গ্লাস পানির সঙ্গে কাঁচা রসুনের কয়েকটি কোয়া খেতে পারেন। তাছাড়া রান্না করে খেলে অ্যালিসিন পাতলা হয়ে যায়, ফলেএটি ভালো কাজ করতে পারে না।
তাই রসুন খাওয়ার আদর্শ উপায় হচ্ছে এটি কাঁচা এবং খালি পেটে খাওয়া। এছাড়াও রসুনের ভালো উপকারিতা পাওয়ার জন্য সকালে খালি পেটে খাওয়া যায়। আর রসুনে সালফার কম্পাউন্ড থাকে চিবিয়ে খেলে এটার কার্যকারিতা বেড়ে যায়। রসুন খাওয়ার সময় ঝাঁঝালো স্বাদ লাগে এতে অনেকেই খেতে পারে না, এজন্য আপনি মধু মিষ্টি খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আবার বিভিন্ন ভর্তা, শাক-সবজি, মুড়ি মাখানোর ক্ষেত্রে রসুন ব্যবহার করে আপনি
খেতে পারেন। এই উপরের এই নিয়মগুলি অনুসরণ করে আপনি রসুন খেতে পারেন। এটা
খাওয়ার ফলে আপনার শারীরিক সুস্থতা আসবে। তাই রসুন খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
প্রতিদিন সকালে একবার রসুন খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
কিডনি রোগ দূর করেঃ রসুনে থাকা এলিসিন নামক যৌগটি কিডনির শিথিলতা, রক্তচাপ
ও মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে
ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করেঃ রসুন ত্বকে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়। রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এ বৈশিষ্ট্যগুলো মুখের ব্রণ কমাতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রসুন এমন একটি উপাদান যা নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন
করতে সাহায্য করে। রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এটি খাওয়ার ফলে শারীরিক ক্ষমতা বাড়ে
এবং ব্যায়ামের সময় ক্লান্তি দূর হয়।
হাড়ের ক্ষয় রোধ করেঃ রসুনের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ ও ম্যাঙ্গানিজের মতো পুষ্টি উপাদান গুলো। এটি শরীরের হাড় গুলোকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হাড়ের ক্ষয় রোধ ও ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ কমায়ঃ রসুন খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। রসুনে
থাকা এলিসিন রক্তনালী গুলোকে শিথিল করে রাখে এবং রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।
এছাড়াও এটি কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ রসুন খাওয়ার ফলে ও রক্তের খারাপ
কোলেস্টেরল গুলি কমে যায় এবং ভালো কোলেস্টেরল গুলি বৃদ্ধি পায়। ভালো কোলেস্টের
গুলি হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি গুলো কমিয়ে যায়।
হজমের সহায়তা করেঃ রসুনে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য গুলি
অন্তের বিভিন্ন ধরনের পরজীবী ও মাইক্রোবিয়াল সংক্রমণ গুলোকে মেরে ফেলে। এটি
নিয়মিত সেবানের ফলে কোলাইটিস, আলসার, গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এটি হজমের
জন্য খুবই উপকারী।
জ্বালাপোড়া দূর করেঃ শরীরের বিভিন্ন জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পেতে রসুন খুবই উপকারী। রসুনের সালফার নামক যৌগ থাকে যার শক্তিশালী আন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব রয়েছে। এছাড়া এটি প্রদাহজনিত রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রসুনে থাকে এলিসিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
যার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে বৃদ্ধি করে। শরীরকে রাখে বিভিন্ন ধরনের রোগের
সংক্রমণ থেকে মুক্ত। নিয়মিত রসুন খেলে সাধারণত সর্দি ও অন্যান্য রোগের তীব্রতা
কমে যায়।
ক্ষতিকর পদার্থ বের করেঃ রসুনে থাকা সালফার যৌগটি শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত
পদার্থকে বের করে দেয়। উন্নত ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া শরীরের দীর্ঘস্থায়ী
রোগের ঝুকি কমিয়ে দেয়।
সকালে একবার রসুন খেলে ৮ রোগ কাছে আসবে না
আমরা সাধারণত রান্না করার ক্ষেত্রে রসুন ব্যবহার করে থাকি। আমরা অনেকেই
জানিনা এই রসুনের গুনাগুন সম্পর্কে। সকালবেলায় খালি পেটে এক কোয়া রসুন
খেলে অনেক রোগ ভালো হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই রসুন খুবই উপকারী। তাছাড়া অনেক সময় পেট খালি
থাকার কারণে এটি খেলে এর রস সহজেই শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে পারে।
আসো জেনে নেই সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে কি উপকার পাওয়া যায়
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই রসুন রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে। এবং রক্তে উপস্থিত সকল শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- শীতের সময় ঠান্ডা লাগলে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দুই সপ্তাহ ধরে রসুন খেলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা কমে যায়।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে শরীরের বিপাকক্রিয়ার কাজ উন্নত হয়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন দূষিত টক্সিন মূত্রনালীর মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
- হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রে রসুন একটি উপকারী উপাদান। এই রসুন খাওয়ার ফলে হৃদস্পন্দনের হার নিয়ন্ত্রন ও হৃদপেশির দেওয়ালে চাপ কম হয়।
- রসুন খাওয়ার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চরণ ঠিক থাকে। এবং রক্তনালীর উপর থেকে রক্তের চাপ কমে যায়। উচ্চ রক্তচাপের মত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ভাইরাস ও সংক্রমণ চলিত অসুখ যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, হুপিং কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
- রসুন খাওয়ার ফলে স্নায়বিক চাপ কমে যায় ফলে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। শারীরিক সুস্থতার জন্য রসুন একটু উপকারী উপাদান। এটি মানসিক স্বাস্থ্য মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
- যৌথ ও মূত্রাশয়কে তাদের কাজ করতে সহায়তা করে রসুন। এছাড়াও পেটের নানান সমস্যা যেমন হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এই রসুন।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের উপকারিতা
যৌন শক্তি বাড়াতে রসুনের উপকারিতা অনেকাংশ বেশি। অনেক সময় দেখা যায়
অনেকের যৌন সমস্যা অথবা অনিমিত মিলনের ফলে টেস্টোস্টেরনের মাত্র অনেক বেশি
কমে যায়। সাধারণত উত্তেজনা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই হরমোন খুবই
প্রয়োজন। আর এই রসুন টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের সহায়তা করে।
রসুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার শরীরের কোষগুলিকে মুক্ত র্যাডিকেলের ক্ষতিকারক প্রভাব হতে রক্ষা করে। রসুনের থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের সহায়তা করে। এছাড়াও রসুন রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, যা যৌনাঙ্গে রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এই বৃদ্ধি পাওয়া রক্ত প্রবাহ টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে।
আরো পড়ুনঃ
কালোজিরা ও মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
দীর্ঘক্ষণ শারীরিক সম্পর্কের কারণে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায়। এ
হরমোনের অনেক প্রয়োজন রয়েছে। তাই এই হরমোন কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই সম্পর্কের
প্রতি অনীহা তৈরি হয়। রসুন খাওয়ার ফলে এই বিশেষ হরমোনের সমস্যা থেকে মুক্তি
পাওয়া যায়। নিয়মিত রসুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
লেখকের শেষ কথাঃ রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। তবে এটির অপকারিতা থেকে উপকারিতা বেশি।
এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর অনেক রোগ থেকে আমরা মুক্তি পায়। এটি আমাদের হজম
ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে দেয়, বিভিন্ন যৌন আমার সাথে একটু মুক্তি
দেয়। রসুন আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারী খাদ্য।
আমার মনে হয় আমাদের শারীর সুস্থতার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ রসুন খাওয়া
উচিত। আপনারা সকলেই আপনাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি
পাওয়ার জন্য নিয়মিত রসুন খাবেন। এই পোস্ট থেকে আপনারা রসুন খাওয়ার নিয়ম
গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন আমি মনে করি।
শান্তি আইটিতে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url